জলদস্যুতা বলতে সাধারনত সমুদ্রে সংঘঠিত ডাকাতি বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে বোঝায়। এই পরিভাষাটি অবশ্য স্থলপথ, আকাশপথ বা অন্য কোন বড় জলবেষ্ঠিত অঞ্চলে বা সৈকতে সংঘঠিত অপরাধের ক্ষেত্রেও ব্যবহার হতে পারে। একই ভেসেলে (ছোট জাহাজ) ভ্রমণকারী এক ব্যক্তির বিরোদ্ধে অপর ব্যক্তির সংঘঠিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড -এর আওতাভুক্ত নয় (যেমন, একই ভেসেলের এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির কাছ থেকে চুরি করলে।)। শব্দটি ঐতিহাসিকভাবে রাষ্ট্রীয় জল সীমানায় অন্য দেশের এজেন্ট (প্রাইভেটিয়ার) বা জলদস্যু কর্তৃক লুণ্ঠেনের জন্য প্রবেশ-এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে।
জলদস্যুতা গতানুগতিক আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে একটি নির্দিষ্ট অপরাধের নাম এবং কিছু কিছু রাষ্ট্রে এটি পৌর আইনের অধীন একটি অপরাধের নাম। জলদস্যুতার মতই আরো একটি পরিভাষা হলো প্রাইভেটারিং, প্রাইভেটিয়াররা যুদ্ধকালীন সময়ে বা কৌশলগত কারণে রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং তার শুধুমাত্র শত্রু দেশের জাহাজই আক্রমণ ও লুট করতেন। কিছু মিল থাকা স্বত্তেও জলদস্যুতা ও প্রাইভেটারিং পরিভাষা দুটি আলাদা।
জলদস্যুতা ঘটনায় নিয়োজিত ব্যক্তিদেরকে জলদস্যু বলা হয়ে থাকে। ঐতিহাসিকভাবে, অপরাধীদের সাধারণত সামরিক ব্যক্তিদের দ্বারা ধরা এবং সামরিক ট্রাইবুনালে বিচার করার চেষ্টা করা হয়েছে। একুশ শতকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জলদস্যুদের বিচারের সম্মুখীন করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
জলি রজার (ইংরেজি: Jolly Roger) হল মড়া মানুষের মাথার খুলি এবং আড়াআড়ি ভাবে রক্ষিত দুটি হাড় সংবলিত একধরনের পতাকা যা জলদস্যুরা তাদের জাহাজের মাস্তুলে আক্রমণের পূর্ব মুহূর্তে ব্যবহার করত। বর্তমানে জলি রজার হিসেবে যেসব পতাকা চিহ্নিত করা হয় তা মূলত, একটি কালো ক্ষেত্রের উপর মানুষের মাথার খুলি এবং খুলির নিচে দুটি দীর্ঘ হাড় আড়াআড়িভাবে (এক্স মার্ক) দেওয়া থাকে। এধরনের নকশার পতাকা কয়েকজন জলদস্যু ব্যবহার করত। তাদের মধ্যে, এডওয়ার্ড ইংল্যান্ড, ক্যাপ্টেন ব্ল্যাক স্যাম বেল্লামি ও জন টেইলর অন্যতম। এছাড়া অন্যান্য জলদস্যুরা তাদের নিজস্ব জলি রজার ব্যবহার করত। কিছু কিছু জলি রজার পতাকায় বালিঘর (Hourglass) ব্যবহার করা হত যা ১৭ থেকে ১৮ শতকের দিকে ইউরোপে মৃতদের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত ছিল। জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে ব্যবহার বাদে, ১৭ ও ১৮ শতাব্দীর অধিকাংশ জলদস্যু জলি রজার হিসেবে শুধুমাত্র একটি কালো কাপড় বা লাল কাপড় ব্যবহার করত। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
Image 7ওয়াল্টার কেনেডির জলি রজার (যাকে জিয়ান থমাস ডুলাইনের পতাকা বলা হয়)। (জলি রজার থেকে)
Image 8ক্রিস্টোফার মুডি কর্তৃক ব্যবহৃত পতাকা। (জলি রজার থেকে)
Image 9জলি রজার নামে জলদস্যু পতাকা, যা সাধারনত ব্ল্যাকবিয়ার্ডের দ্বারা ব্যবহৃত হত। একইধরনের পতাকা এডওয়ার্ড লুই ও ফ্রান্সিস স্প্রিগস ব্যবহার করতেন বলে জানা যায়। (জলি রজার থেকে)
ওয়াইদাহর ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা রৌপ্য। ফোর্বস ম্যাগাজিন "টপ-আর্নিং পাইরেটস" এর তালিকায় বেলামিকে #১ এ স্থান দিয়েছে।
ক্যাপ্টেন স্যামুয়েল বেল্লামি (আনু. ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৬৮৯ – ২৬ এপ্রিল ১৭১৭) ছিলেন ১৮-শতকের একজন ইংরেজ জলদস্যু। তিনি ব্ল্যাক স্যাম বেল্লামি নামে অধিক পরিচিত। যদিও তার জলদস্যু জীবন এক বছরেরও কম সময় স্থায়ী ছিল, তারপরও তিনি ও তার ক্রুরা কমপক্ষে ৫৩টি জাহাজ লুট করেন। ২৮ বছর বয়সে তার মৃত্যুর পূর্বে তিনি ছিলেন ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী জলদস্যু। কেপ কোডের লোককাহিনীতে তাকে ব্ল্যাক স্যাম বলা হয় কারণ তিনি তার লম্বা চুল পিছনে নেওয়ার জন্য এক ধরনের ফ্যাশানেবল পাউডার ও চুলের ব্যান্ড ব্যবহার করতেন। বেল্লামি সবসময় তার লুট করা জাহাজের বন্দিদের ক্ষমা করে দিতেন এবং জাহাজের লোকদের কোন প্রকার ক্ষতি করতেন না। এই চরিত্রের কারণে তিনি প্রিন্স অফ পাইরেট খেতাব অর্জন করেন। তিনি নিজেকে রবিনহুডের সাথে তুলনা করতেন এবং তার ক্রুরা নিজেদেরকে রবিনহুডের লোক বলে পরিচয় দিত। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
অ্যাডভেঞ্চার গ্যালি (ইংরেজি:Adventure Galley) (অ্যাডভেঞ্চার নামেও পরিচিত) হল কুখ্যাত ইংরেজ প্রাইভেটিয়ার উইলিয়াম কিডের জাহাজের মত দেখতে পাল তোলা ছোট নৌকা। এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে, এটি বাতাসে পাল উড়িয়ে বা বৈঠার সাহায্যে চালনা করা যেত। সেসময় এই ডিজাইনের জাহাজ প্রচলিত ছিল না। তরিটি ১৬৯৫ সালের শেষের দিকে পানিতে ভাসানো হয়েছিল এবং পরের বছর উইলিয়াম কিড তার প্রাইভেটিয়ারিং কাজের জন্য তরিটি সংগ্রহ করেন। এপ্রিল ১৬৯৬ সাল থেকে এপ্রিল ১৬৯৮ সাল পর্যন্ত এটি ভারত ও আটলান্টিক মহাসাগরে জলদস্যুর খোঁজে হাজার হাজার মাইল পড়ি দেয় কিন্তু কোন জলদস্যু আটক করতে ব্যর্থ হয়। অবশ্য এর যাত্রার শেষ পর্যায়ে তরিটি কিছুটা সফল হয়েছিল। জানা যায় উইলিয়াম কিডও কোন জলদস্যু ধরতে না পারর হতাশা ও কোন প্রকার উপঢৌকন না পাওয়ার হতাশা থেকে নিজেই একসময় জলদস্যুতে পরিনত হন। অ্যাডভেঞ্চার গ্যালি ভারত মহাসাগর থেকে দুটি ভেসেল আটক করতে সক্ষম হয় ও তাদের মাদাগাস্কার নিয়ে আসে। কিন্তু ১৬৯৮ -এর বসন্তের দিকে জাহাজের কাঠামোতে প্রচুর ফাঁটল ও গর্ত দেখা দেয়, এবং সমুদ্রে যাত্রার অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। পরবর্তীতে এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত এটি মাদাগাস্কারের উত্তর-পূর্ব উপকূলে ডুবে যায়। ১৯৯৯-২০০০ এর মাঝামাঝি সময়ে, খবর ছড়িয়ে পরে অন্যান্য কয়েকটি ডুবে যাওয়া জলদস্যু জাহাজের সাথে অ্যাডভেঞ্চার গ্যালির ধংস্ববাশেষ পাওয়া গিয়েছে। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)