বিষয়বস্তুতে চলুন

যমুনা রেলসেতু

স্থানাঙ্ক: ২৪°২৪′০৯″ উত্তর ৮৯°৪৬′০৫″ পূর্ব / ২৪.৪০২৬° উত্তর ৮৯.৭৬৮১° পূর্ব / 24.4026; 89.7681
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
যমুনা রেল সেতু
যমুনা রেল সেতু
স্থানাঙ্ক ২৪°২৪′০৯″ উত্তর ৮৯°৪৬′০৫″ পূর্ব / ২৪.৪০২৬° উত্তর ৮৯.৭৬৮১° পূর্ব / 24.4026; 89.7681
বহন করেট্রেন
অতিক্রম করেযমুনা নদী
স্থানসিরাজগঞ্জটাঙ্গাইল জেলা
যার নামে নামকরণযমুনা নদী
মালিকবাংলাদেশ রেলওয়ে
রক্ষণাবেক্ষকবাংলাদেশ রেলওয়ে
বৈশিষ্ট্য
উপাদানইস্পাত
ভারবাহী স্তম্ভ নির্মাণকংক্রিট
মোট দৈর্ঘ্য৪.৮ কিলোমিটার
ইতিহাস
নির্মাণকারী
  • আইএইচআই
  • এসএমসিসি
  • ওবায়শি করপোরেশন
  • জেএফই
  • টিওএ করপোরেশন
নির্মাণ ব্যয়১৬ হাজার ৭৮১ কোটি বাংলাদেশী টাকা
উদ্বোধন হয়১৮ মার্চ ২০২৫
পরিসংখ্যান
দৈনিক চলাচল৮৮
অবস্থান
মানচিত্র

যমুনা রেল সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের একটি রেলওয়ে সেতু যা সিরাজগঞ্জ জেলার সাথে টাঙ্গাইল জেলার ভূয়াপুর উপজেলাকে যুক্ত করেছে। এই সেতুর ৮৫ ভাগ টাঙ্গাইল জেলার এবং বাকি অংশ সিরাজগঞ্জে। যমুনা নদীর উপর যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে অবস্থিত এই সেতুটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম রেলওয়ে সেতু এবং ২০২৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে এতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়।[] সেতুটি ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ উদ্বোধন করা হয়।[]

পটভূমি

[সম্পাদনা]

২০২০ সালের অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী বিদ্যমান যমুনা সেতু দিয়ে দিনে ৪৪টি ট্রেন চলাচল করে।[] সেতুটিতে পূর্ণ গতিতে ট্রেন চলতে না পারায় এবং সিঙ্গেল-ট্র্যাক রেলপথ হওয়ায় সেতু পার হতে অধিক সময় খরচ হয়, ফলে ট্রেনগুলো শিডিউল বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে পড়ে।[][] ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার গতিতে চলা একটি ট্রেন সেতুটির পূর্ব পাশের স্টেশন থেকে পশ্চিম পাশের স্টেশনে পৌঁছতে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় নেয়।[] এছাড়াও সেতুটিতে ওজন সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে ভারী পণ্যবাহী ট্রেন চলতে পারে না।[] যমুনা রেলওয়ে সেতুতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর গন্তব্যে পৌঁছার সময় গড়ে ২ ঘণ্টা কমে যাবে।[] পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে রেলপথে পণ্য পরিবহনের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।[] এ ছাড়াও অভ্যন্তরীণ রুটে সহজে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনেও এ সেতুটি কাজে লাগবে।[] এ ছাড়াও সেতুটি সার্ক, বিমসটেক, সাসেক ও অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক রেলওয়ে রুট এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলপথ নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ।[] সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় ২০২৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে যমুনা সেতুর রেলপথ দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।[]

প্রকল্প ও অর্থায়ন

[সম্পাদনা]

প্রথমে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বরে সেতুটির নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।[] এ জন্য ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার, যার মধ্যে জাপানের উন্নয়ন সহযোগিতা প্রতিষ্ঠান জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা দিয়েছে।[] ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।[]

প্রকল্পটি পৃথক দুটি প্যাকেজে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।[][১০] এর মধ্যে একটি ডব্লিউডি-১ পাকেজে যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প পূর্বাঞ্চলের সিভিল ওয়ার্ক এবং প্যাকেজ ডব্লিউডি-২ যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ পশ্চিমাঞ্চলের সিভিল ওয়ার্ক।[১০] সেতুটির পূর্ব অংশ নির্মাণ করবে ওবায়শি করপোরেশন, টিওএ করপোরেশন এবং জেএফই।[] এই অংশের জন্য ব্যয় হবে ৬ হাজার ৮০১ কোটি টাকা।[] আইএইচআই এবং এসএমসিসির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হবে পশ্চিম অংশ।[] এই অংশে ব্যয় হবে ৬ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা।[][১১]

অবকাঠামো

[সম্পাদনা]

এ সেতুটি ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ।[][] উভয় প্রান্তে মোট প্রায় ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, প্রায় ৭.৬৬৭ কিলোমিটার এপ্রোচ এমব্যাংমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ মোট প্রায় ৩০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে।[] সেতুটি সম্পূর্ণ ইস্পাত দিয়ে নির্মাণ করা হবে।[] প্রায় ৫০টি পিলারের ওপর কংক্রিটের ওপর রেলপথ বসানো হবে।[] এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সেতুতে স্টিল পাইপ শিট পাইল (এসপিএসপি) ফাউন্ডেশন, সেতুতে স্লিপার থাকবে না, ওয়েদারিং স্টিল (যা মরিচা ও ক্ষয় প্রতিরোধী) এবং ড্রিলমে প্রিভেনশন গার্ড (দুর্ঘটনা প্রতিরোধী) এরকম নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।[] এতে ডুয়েল গেজ ডাবল-ট্র্যাক রেলপথ থাকবে।[] সেতুটিতে ব্রড-গেজ ট্রেন ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা এবং মিটার-গেজ ট্রেন ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে চলাচল করবে।[১২] এছাড়াও সেতুটিতে দৈনিক মোট ৩২টি ট্রেন চলাচল করবে।[]

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "দেশের দীর্ঘতম রেলসেতুতে উঠল যাত্রীবাহী ট্রেন"মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-১২ 
  2. "যমুনা রেল সেতু উদ্বোধন, প্রতিদিন চলবে ৩২ ট্রেন"দৈনিক ইত্তেফাক। ২০২৫-০৩-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-৩১ 
  3. "যমুনায় দ্বিতীয় রেল সেতুর কাজ শুরু নভেম্বরে, ব্যয় বাড়লো দ্বিগুণ"বাংলা ট্রিবিউন। ২০২০-১০-১৯। ২০২০-১১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩ 
  4. "বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে রেলসেতু হবে"প্রথম আলো। ২০১৬-১২-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩ 
  5. "যমুনায় রেলসেতু: কাজ শুরুর আগেই ব্যয় বেড়েছে ৩,২১৬ কোটি টাকা"দ্য ডেইলি স্টার। ২০২০-০১-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩ 
  6. "১৪ মার্চ নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী"দৈনিক ইনকিলাব। ২০২০-০২-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩ 
  7. "বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর ভিত্তিস্থাপন ২৯ নভেম্বর"বিডিনিউজ২৪.কম। ২০২০-১১-১২। ২০২০-১১-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩ 
  8. bdnews24.com। "যমুনা রেল সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু"যমুনা রেল সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-১২ 
  9. "যমুনা রেলসেতুতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন মার্চে"প্রথম আলো। ২০২৫-০২-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-৩১ 
  10. "যমুনায় হচ্ছে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু'"রাইজিংবিডি.কম। ২০২০-০১-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩ 
  11. ৩৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন ২০২৪ সালে চলবে রেল, ইনকিলাব, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
  12. "২৯ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন"দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২০২০-১১-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]