বিলি হলিডে
বিলি হলিডে | |
---|---|
ইংরেজি: Billie Holiday | |
![]() আনু. ১৯৪৭ সালে হলিডে তার কুকুর মিস্টারের সাথে | |
জন্ম | এলিনরা ফ্যাগান ৭ এপ্রিল ১৯১৫ |
মৃত্যু | ১৭ জুলাই ১৯৫৯ নিউ ইয়র্ক সিটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৪৪)
সমাধি | সেন্ট রেমন্ড্স সেমেটারি |
অন্যান্য নাম | লেডি ডে |
পেশা | সঙ্গীতশিল্পী |
কর্মজীবন | আনু. ১৯৩০–১৯৫৯ |
দাম্পত্য সঙ্গী |
|
সঙ্গীত কর্মজীবন | |
ধরন | |
লেবেল | |
ওয়েবসাইট | billieholiday |
স্বাক্ষর | |
![]() |
বিলি হলিডে (ইংরেজি: Billie Holiday; জন্ম: এলিনরা ফ্যাগান; ৭ এপ্রিল ১৯১৫ – ১৭ জুলাই ১৯৫৯) একজন মার্কিন জ্যাজ ও সুইং সঙ্গীতশিল্পী। বন্ধু ও সঙ্গীতের সঙ্গী লেস্টার ইয়াংয়ের নিকট "লেডি ডে" ডাকনামে পরিচিত হলিডে মার্কিন জ্যাজ ও পপ সঙ্গীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। জ্যাজ বাদ্যযন্ত্রীদের দ্বারা প্রভাবিত তার কণ্ঠশৈলি বাক্য গঠন ও লয় নিয়ন্ত্রণের নতুন উপায়কে প্রভাবিত করে। তিনি তার কণ্ঠস্বর ও তাৎক্ষণিক পরিবর্তিত পরিবেশনার কৌশলের জন্য সুপরিচিত ছিলেন।
অশান্ত শৈশব কাটানোর পর হলিডে হারলেমের নাইটক্লাবে গান গাইতে শুরু করেন। সেখানে প্রযোজক জন হ্যামন্ড তাকে গাইতে শোনেন এবং তার কণ্ঠস্বর পছন্দ করেন। ১৯৩৫ সালে ব্রান্সউইকের সাথে তিনি একটি রেকর্ডিং চুক্তি স্বাক্ষর করেন। টেডি উইলসনের সাথে তার যুগলবন্দী "হোয়াট আ লিটল মুনলাইট ক্যান ডু" গানটি সফল হয়, যা জ্যাজ সঙ্গীতের মানদণ্ডে পরিণত হয়। ১৯৩০ ও ১৯৪০-এর দশক জুড়ে হলিডে কলম্বিয়া এবং ডেকার মত লেবেলের সাথে কাজ করে মূলধারার সাফল্য অর্জন করেন। তবে ১৯৪০-এর দশকের শেষের দিকে তিনি আইনি ঝামেলায় পড়েন ও মাদক ব্যবহারে লিপ্ত হন। অল্প সময়ের কারাদণ্ডের পর তিনি কার্নেগি হলে একটি কনসার্ট পরিবেশনা করেন, যার সকল টিকেট বিক্রীত হয়। ১৯৫০-এর দশক জুড়ে তিনি সফল কনসার্ট শিল্পী ছিলেন, এবং কার্নেগি হলে আরও দুটি কনসার্টের সকল টিকেট বিক্রীত হয়। ব্যক্তিগত সংগ্রাম ও পরিবর্তিত কণ্ঠস্বরের কারণে তার শেষদিকের রেকর্ডিংগুলো মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়, তবে সামান্য ব্যবসাসফলতা লাভ করে। ১৯৫৮ সালে তার শেষ অ্যালবাম লেডি ইন স্যাটিন প্রকাশিত হয়। হলিডে ১৯৫৯ সালের ১৭ জুলাই ৪৪ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
হলিডে চারটি গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করেন, সবকয়টি মরণোত্তর তার বেস্ট হিস্টরিক্যাল অ্যালবামের জন্য। গ্র্যামি হল অব ফেম ও ন্যাশনাল রিদম অ্যান্ড ব্লুজ হল অব ফেমে তার নাম স্থান পায়। ২০০০ সালে শুরুর দিকের প্রভাবের জন্য রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেমে তার নাম স্থান পায়; তাদের ওয়েবসাইটের ভাষ্যমতে, "বিলি হলিডে জ্যাজ সঙ্গীতকে চিরতরে পরিবর্তন করে দেন।" এনপিআর তাদের ৫০ সেরা কণ্ঠ তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করে এবং রোলিং স্টোন-এর "সর্বকালের সেরা ২০০ সঙ্গীতশিল্পী" তালিকায় তিনি চতুর্থ স্থান অধিকার করেন।[১] তার জীবনী অবলম্বনে একাধিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লেডি সিংস দ্য ব্লুজ (১৯৭২) ও দ্য ইউনাইটেড স্টেটস ভার্সাস বিলি হলিডে (২০২১)।
জীবনী ও কর্মজীবন
[সম্পাদনা]১৯১৫–১৯২৯: শৈশব
[সম্পাদনা]এলিনরা ফ্যাগান[২][৩] ১৯১৫ সালের ৭ই এপ্রিল[৪] ফিলাডেলফিয়ায় অবিবাহিত আফ্রিকান মার্কিন কিশোর যুগল ক্ল্যারেন্স হ্যালিডে ও সারা জুলিয়া "স্যাডি" ফ্যাগানের (কুমারী নাম: হ্যারিস) ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা অন্তঃসত্ত্বা হলে তার পিতামাতা তাকে মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোরের নিকটস্থ স্যান্ডটাউন-উইনচেস্টারের বাড়ি থেকে বের করে দিলে ১৯ বছর বয়সী স্যাডি ফিলাডেলফিয়ায় চলে যান।[৫] পিতামাতার সহযোগিতা ছাড়াই তিনি তার বড় ও বিবাহিত সৎ বোন ইভা মিলারের সাথে বাল্টিমোরে থাকতে শুরু করেন। হলিডের জন্মের কিছুদিন পর তার পিতা জ্যাজ ব্যাঞ্জোবাদক ও গিটারবাদক হিসেবে কর্মজীবন গড়তে তাদের পরিবার ত্যাগ করেন।[৬] কয়েকজন ইতিহাসবিদের মধ্যে হলিডের পিতৃত্ব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, কারণ বাল্টিমোর আর্কাইভ লিস্টে তার জন্মসনদে তার পিতার নাম "ফ্র্যাঙ্ক ডিভিজা" নামে তালিকাভুক্ত রয়েছে। অন্যান্য ইতিহাসবিদগণ একে সম্ভবত হাসপাতাল বা সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক তালিকাভুক্তির অসঙ্গতি বলে গণ্য করেন।[৭] ডিভিজা ফিলাডেলফিয়ায় বসবাস করতেন এবং স্যাডি, তখন তার কুমারী নাম হ্যারিস নামে পরিচিত, ডিভিজার সাথে তার কাজের সূত্রে পরিচিত হতে পারেন। হ্যারিস ১৯২০ সালে ফিলিপ গগকে বিয়ে করেন,[৮] কিন্তু সেই বিয়ে মাত্র কয়েক বছর টিকেছিল।[৯]
হলিডে বাল্টিমোরে বেড়ে ওঠেন এবং তার শৈশব খুবই কষ্টদায়ক ছিল। তার মা যাত্রীবাহী রেলগাড়িতে কাজ করতেন।[১০] হলিডেকে লালন পালন করেন ইভা মিলারের শাশুড়ি মার্থা মিলার। ফলে তিনি তার জীবনের প্রথম দশক মায়ের অনুপস্থিতি ও অন্যের যত্নে লালিত পালিত হন।[১১]
হলিডে প্রায়ই বিদ্যালয় থেকে পালাতেন, যার ফলে তাকে নয় বছর বয়সে কিশোর আদালতে পেশ করা হয়।[১২] তাকে বালিকাদের জন্য ক্যাথলিক সংস্কার বিদ্যালয় হাউজ অব দ্য গুড শেপার্ডে প্রেরণ করা হয়, সেখানে তার খারাপ আচারণের জন্য শাস্তি হিসেবে নানরা তাকে একটি মৃত মেয়ের সাথে দিনরাত আটকে রাখে। এই শাস্তির ফলে তিনি মর্মপীড়িত হন এবং বেশ কয়েক বছর তিনি তা স্বপ্নে দেখতেন এবং চিৎকার করে তার ঘুম ভাঙত।[১৩][১৪] নয় মাস পর ১৯২৫ সালের ৩রা নভেম্বর তিনি ছাড়া পান এবং মায়ের কাছে ফিরেন। স্যাডি ইস্ট সাইড গ্রিল নামে একটি রেস্তোরাঁ খুলেন। মা ও মেয়ে সেখানে দীর্ঘ সময় কাজ করতেন। ১১ বছর বয়সে হলিডে বিদ্যালয় থেকে পরিত্যাগ করেন।[১৫]
১৯২৬ সালের ২৪শে ডিসেম্বর হ্যারিস বাড়িতে এসে দেখতে পান একজন প্রতিবেশি হলিডেকে ধর্ষণ করতে চাচ্ছে। তিনি হলিডেকে তার হাত থেকে বাঁচান এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়। সরকারি কর্মকর্তারা হলিডেকে এই ধর্ষণ মামলার রাষ্ট্রীয় সাক্ষী হিসেবে হাউজ অব গুড শেফার্ডে প্রতিরক্ষামূলক হেফাজতে পাঠান।[১৬] ১৯২৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হলিডেকে সেখান থেকে ছাড়া হয়, তখন তার বয়স ছিল ১২ এর কাছাকাছি। তিনি একটি গণিকালয়ে কাজকর্ম করার চাকরি পান,[১৭] এবং তিনি সেখানে মার্বেলের সিঁড়ি, এবং পাশের বাড়ির রান্নাঘর ও বাথরুমের মেঝে পরিষ্কার করতেন।[১৮] এই সময়ে তিনি প্রথম লুইস আর্মস্ট্রং ও বেসি স্মিথের রেকর্ড শোনেন। বিশেষ করে, হলিডে বলেন "ওয়েস্ট এন্ড ব্লুজ" এর ব্যাপক প্রভাব ছিল, নির্দিষ্ট করে বললে ক্ল্যারিনেটের সাথে স্ক্যাট সেকশনের দ্বৈত অংশ তার প্রিয় অংশ ছিল।[১৯] ১৯২৮ সালের শেষভাগে হলিডের মা তাকে আবারও মার্থা মিলারের কাছে রেখে নিউ ইয়র্কের হারলেমে চলে যান।[২০] ১৯২৯ সালের শুরুতে হলিডে তার মায়ের কাছে হারলেমে চলে যান।
১৯২৯–১৯৩৫: প্রারম্ভিক কর্মজীবন
[সম্পাদনা]কিশোর বয়সে হলিডে হারলেমের নাইটক্লাবে গান গাইতে শুরু করেন। তিনি তার প্রিয় অভিনেত্রী বিলি ডাভ ও তার পিতা ক্ল্যারেন্স হ্যালিডের নাম থেকে তার পেশাদার ছদ্মনাম বিলি হ্যালিডে গ্রহণ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি তার পিতার নামের শেষাংশ হ্যালিডে লিখতেন, কিন্তু পরবর্তীকালে তার বাবার মঞ্চনাম "হলিডে" অনুসারে তিনিও হলিডে ব্যবহার করা শুরু করেন।[২১] কিশোরী হলিডে তার প্রতিবেশী স্যাক্সোফোন বাদক কেনেথ হোলানের সাথে দল গঠন করেন। ১৯২৯ সালে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত দলবদ্ধভাবে তারা গ্রে ডন, পড্স অ্যান্ড জেরিস অন ১৩৩ স্ট্রিট ও ব্রুকলিন একস ক্লাব-সহ বিভিন্ন ক্লাবে গান পরিবেশন করতেন।[২২][২৩] বেনি গুডম্যান ১৯৩১ সালে ব্রাইট স্পটে হলিডের গান শুনেছেন বলে উল্লেখ করেন। তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লে তিনি মেক্সিকো ও আলামব্রা বার অ্যান্ড গ্রিল-সহ অসংখ্য ক্লাবে গান পরিবেশন করেন। আলামব্রায় কণ্ঠশিল্পী চার্লস লিন্টনের সাথে হলিডের পরিচয় হয়। লিন্টন পরবর্তীকালে চিক ওয়েবের সাথে কাজ করেছেন। এই সময়ে তার পিতার সাথে তার যোগাযোগ হয়। তার পিতা তখন ফ্লেচার হেন্ডারসনের ব্যান্ডে বাদ্যযন্ত্র বাজাতেন।[২৪]
১৯৩২ সালের শেষভাগে ১৭ বছর বয়সী হলিডে ওয়েস্ট ১৩২ স্ট্রিটের কোভান্স ক্লাবে সঙ্গীতশিল্পী মোনেত মুরের স্থলাভিষিক্ত হন। প্রযোজক জন হ্যামন্ড মুরের গায়কী পছন্দ করতেন এবং তার গান শুনতে আসতেন। তিনি ১৯৩৩ সালের শুরুতে প্রথম হলিডের গান শোনেন।[২৫] হ্যামন্ড ১৯৩৩ সালের নভেম্বর মাসে বেনি গুডম্যানের সাথে ১৮ বছর বয়সী হলিডের প্রথম রেকর্ডিং করার ব্যবস্থা করেন। তিনি "ইওর মাদার্স সন-ইন-ল" ও "রিফিন' দ্য স্কচ" শীর্ষক দুটি গান রেকর্ড করেন, দ্বিতীয় গানটি তার প্রথম সফল গান। "সন-ইন-ল" গানের ৩০০ কপি এবং ১১ই নভেম্বর প্রকাশিত "রিফিন' দ্য স্কচ" গানের ৫,০০০ কপি বিক্রি হয়। হ্যামন্ড হলিডের গায়কীর ধরনে মুগ্ধ হন এবং তার সম্পর্কে বলেন, "তার গায়কী আমার সঙ্গীতের রুচি ও সঙ্গীত জীবনকে পরিবর্তন করে দিয়েছিল, তিনি আমার দেখা প্রথম গায়িকা যিনি সত্যিকার অর্থেই একজন জ্যাজ প্রতিভাধর হিসেবে গান গাইতেন।" হ্যামন্ড হলিডেকে লুইস আর্মস্টংয়ের সাথে তুলনা করেন এবং বলেন খুব অল্প বয়সেই তার গীতের বিষয়বস্তুর প্রতি ভালো ধারণা রয়েছে।[২৬]
১৯৩৫ সালে হলিডে ডিউক এলিংটনের সঙ্গীতধর্মী স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সিম্ফনি ইন ব্ল্যাক: আ র্যাপসোডি অব নিগ্রো লাইফ-এ প্রেমিকের দ্বারা লাঞ্ছিত নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনীত দৃশ্যে তিনি "স্যাডেস্ট টেল" গান গেয়েছিলেন।[২৭]
১৯৩৫–১৯৩৮: টেডি উইলসনের সাথে রেকর্ডিং
[সম্পাদনা]১৯৩৫ সালে হলিডে জিউকবক্স ট্রেডের জন্য সুইং ধারায় পিয়ানোবাদক টেডি উইলসনের সাথে পপ সুর রেকর্ড করতে জন হ্যামন্ডের মাধ্যমে ব্রান্সউইক রেকর্ডিংয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। তাদের প্রদত্ত বিষয়বস্তুতে তাৎক্ষণিক পরিবর্তন আনার আনুমতি দেওয়া হয়েছিল। গানের আবেগের সাথে খাপ খাওয়াতে হলিডের সুরের পরিবর্তন খুবই দক্ষ ছিল। তার প্রথম যুগলবন্দিতে "হোয়াট আ লিটল মুনলাইট ক্যান ডু" ও "মিস ব্রাউন টু ইউ" অন্তর্ভুক্ত ছিল। "হোয়াট আ লিটল মুনলাইট ক্যান ডু" তাকে খ্যাতি এনে দেয় বলে ধারণা করা হয়।[২৮] ব্রান্সউইক রেকর্ডিং সেশনের পক্ষে ছিলেন না কারণ প্রযোজকরা চেয়েছিলেন হলিডে যেন ক্লিও ব্রাউনের মত গান করেন। তবে "হোয়াট আ লিটল মুনলাইট ক্যান ডু" গানের সফলতার পর কোম্পানিটি হলিডেকে তার নিজের মত আলাদা স্বত্বাধিকারী শিল্পী হিসেবে গণ্য করতে শুরু করে।[২৯] এক বছর পর তিনি ভোকালিয়নের হয়ে তার নিজের নামে হ্যামন্ড ও বার্নি হ্যানিগেনের প্রযোজনায় গান রেকর্ড করতে শুরু করেন।[৩০] হ্যামন্ড বলেন ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৮ সালে উইলসন-হলিডে রেকর্ডিংসমূহ ব্রান্সউইকের সেরা সম্পদ। হ্যামন্ডের মতে ব্রান্সউইক ভঙ্গুর ও জ্যাজ সুর রেকর্ড করতে অক্ষম ছিল। উইলসন, হলিডে, ইয়াং ও অন্যান্য সঙ্গীতজ্ঞরা কোন প্রকার লিখিত ব্যবস্থা না নিয়ে স্টুডিওতে আসে এবং রেকর্ডিংয়ের খরচ কমান। ব্রান্সউইক হলিডেকে রয়্যালটির পরিবর্তে নির্দিষ্ট পারিতোষিক দিত, যার ফলে কোম্পানির অর্থ বেঁচে যেত। "আই ক্রাইড ফর ইউ" গানের ১৫,০০০ কপি বিক্রি হয়েছিল, হ্যামন্ড একে "ব্রান্সউইকের বিশাল সফলতা" বলে উল্লেখ করেন, কারণ অধিকাংশ রেকর্ড যেগুলো ব্যবসা করেছিল সেগুলোর তিন থেকে চার হাজারের মত কপি বিক্রি হয়েছিল।[৩১]
হলিডের আরেকজন যুগলবন্দি ছিলেন চড়া সুরের স্যাক্সোফোন বাদক লেস্টার ইয়াং। ইয়াং ১৯৩৪ সালে তার মায়ের বাড়িতে ভাড়াটে ছিলেন এবং তার সাথে হলিডের সম্পর্ক ছিল।[৩২] ইয়াং তার ডাকনাম দেন "লেডি ডে" এবং তিনি ইয়াংকে "প্রেজ" বলে ডাকতেন।[৩৩]
অসুস্থ্যতা ও মৃত্যু
[সম্পাদনা]১৯৫৯ সালের শুরুর দিকে হলিডের যকৃতের সিরোসিস ধরা পড়ে। যদিও তিনি ডাক্তারের নির্দেশে মদ্যপান বন্ধ করেছিলেন, তবে সিরোসিস ধরা পড়ার কিছুদিন আগে থেকে তিনি আবার মদ্যপান শুরু করেন।[৩৪] ১৯৫৯ সালের মে মাসের মধ্যে তার প্রায় ২০ পাউন্ড (৯.১ কেজি) ওজন কমে যায়। তার ব্যবস্থাপক, জো গ্লেজার, জ্যাজ সমালোচক লিওনার্ড ফিদার, আলোকচিত্র সংবাদিক অ্যালান মরিসন এবং তার নিজের বন্ধুরা তাকে হাসপাতালে যেতে বলেও ব্যর্থ হন।[৩৫] ১৯৫৯ সালের ৩১শে মে হলিডেকে যকৃত ও হৃদপিণ্ডের রোগের চিকিৎসার জন্য নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রক পুলিশ তার হাসপাতালের কক্ষে আসেন এবং তাকে মাদকদ্রব্য রাখার অপরাধে গৃহবন্দি করেন।[৩৬] ১৫ই জুলাই তাকে খ্রিস্টধর্ম মোতাবেক অনুলেপন করা হয়।[৩৭] ১৯৫৯ সালের ১৭ই জুলাই রাত ৩:১০ মিনিটে ৪৪ বছর বয়সে যকৃতের সিরোসিসের ফলে পাল ফুসফুসের শোথ এবং হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।[৩৮][৩৯][৪০]
হলিডে তার জীবনের শেষ বছরগুলোতে তার উপার্জন থেকে ম্যাককে ধীরে ধীরে ফাঁকি দিয়ে ব্যাংকে ০.৭০ মার্কিন ডলার রেখে মারা যান। তার শেষকৃত্যের গল্প এবং তার বিচ্ছিন্ন স্বামী কীভাবে তা পরিচালনা করেছিলেন তা ২০১২ সালে এনপিআর-তে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৫৯ সালের ২১শে জুলাই তার শেষকৃত্য ম্যানহাটনের সেন্ট পল দ্য অ্যাপোস্টেলের গির্জায় অনুষ্ঠিত হয়। তাকে ব্রংক্সের সেন্ট রেমন্ড্স সেমেটারিতে সমাহিত করা হয়। ম্যানহাটন-ভিত্তিক গীতিকার ও মঞ্চ প্রযোজক দ্বিতীয় মাইকেল পি. গ্রেস তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচ বহন করেন।[৪১][৪২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "The 200 Greatest Singers of All Time"। রোলিং স্টোন (ইংরেজি ভাষায়)। ১ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০২৫।
- ↑ ক্লার্ক, ২০০২, পৃ. ৯।
- ↑ "About Billie Holiday," ২০০২।
- ↑ "Billie Holiday Biography"।
- ↑ ওমিলি, ১৯৯১, পৃ. ৬৪।
- ↑ ডুফুর, ১৯৯৯, পৃ. ৪০–৪২।
- ↑ ক্লার্ক, ২০০২, পৃ. xiii।
- ↑ "Billie Holiday Biography"। বায়োগ্রাফি। এঅ্যান্ডই টেলিভিশন নেটওয়ার্কস। ২ এপ্রিল ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৩০, ২০২২।
- ↑ র্যান্ডলফ, এলিজাবেথ (২২ মার্চ ২০২১)। "Who Gave Billie Holiday the Nickname Lady Day?"। শোবিজ চিট শিট (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০২৫।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ২১–২২।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ১৮–২৩।
- ↑ রিপাট্রাজোন, ১৪ আগস্ট, ২০১৮।
- ↑ মিয়ার্স, হ্যাডলি (৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২১)। "Good Morning Heartache: The Life and Blues of Billie Holiday"। ভ্যানিটি ফেয়ার। ডিসেম্বর ৭, ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ হলিডে; ডাফটি (১৯৫৬)। Lady Sings the Blues। পৃষ্ঠা ১১৮।
They had no more business putting me in that Catholic institution. . . . For years I used to dream about it and wake up hollering and screaming. My God, it's terrible what something like this does to you. It takes years and years to get over it; it haunts you and haunts you.
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ২২–২৪।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ২৫।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ২৭।
- ↑ এফ, ২০১৩, পৃ. ৬৩।
- ↑ ব্রাদার্স, ২০১৪, পৃ. ২৯৮।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ৩১।
- ↑ হলিডে অ্যান্ড ডাফি, ১৯৫৬, পৃ. ১৩।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ৩৫–৩৭।
- ↑ ভেইল, ১৯৯৬, পৃ. ৩২।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ৩৫–৩৯।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ৩৯।
- ↑ গোর্স, ২০০০, পৃ. ৭৩।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. ৫৬।
- ↑ বুশ, ২০০৩, পৃ. ২৩৯–২৪০।
- ↑ নিকোলসন, ১৯৯৫, পৃ. 65।
- ↑ নোভেস, "The Composers"।
- ↑ গোর্স, ২০০০, পৃ. ৭৩–৭৪।
- ↑ শেলডন, ২০১১, পৃ. ৩৩৪–৩৫০।
- ↑ হলিডে, বিলি; ডাফি, উইলিয়াম (১৯৫৬)। Lady Sings the Blues।
- ↑ ফিদার, ১৯৭২, পৃ. ৮২।
- ↑ ফিদার, ১৯৭২, পৃ. ৮৩।
- ↑ সোনবর্ন, লিজ (১৪ মে ২০১৪)। A to Z of American Women in the Performing Arts। ইনফোবেজ। আইএসবিএন 978-1-4381-0790-5।
- ↑ হোয়াইট, ১৯৮৭, পৃ. ১১০।
- ↑ "Billie Holiday Biography"। বায়োগ্রাফি.কম। ১২ নভেম্বর ২০২১। পৃষ্ঠা ৩। ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০২৫।
- ↑ নিউ ইয়র্ক টাইমস, ১৮ জুলাই ১৯৫৯, পৃ. 15।
- ↑ নিউ ইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিন, ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৭২, পৃ. ৮–৯, ১৮–১৯।
- ↑ এনপিআর, মর্নিং এডিশন, ১৭ জুলাই, ২০১২।
- ↑ "Michael P. Grace (Producer, Lyricist, Composer)"। প্লেবিল। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০২৫।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]

- Discography
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে বিলি হলিডে (ইংরেজি)
- ইন্টারনেট ব্রডওয়ে ডেটাবেজে বিলি হলিডে (ইংরেজি)
- প্লেবিল ভল্টে বিলি হলিডে (archive)
- "Twelve Essential Billie Holiday Recordings" by Stuart Nicholson, Jazz.com
- Emory University: Billie Holiday collection, 1953-1981
- ফাইন্ড এ গ্রেইভে বিলি হলিডে (ইংরেজি)
- Playbill person ID উইকিউপাত্তের মত একই
- Articles with faulty RISM identifiers
- Pages with red-linked authority control categories
- বিলি হলিডে
- ১৯১৫-এ জন্ম
- ১৯৫৯-এ মৃত্যু
- ২০শ শতাব্দীর আফ্রিকান-মার্কিন গায়িকা
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন এলজিবিটিকিউ ব্যক্তি
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন গায়িকা
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী
- আফ্রিকান-মার্কিন ক্যাথলিক
- আফ্রিকান-মার্কিন গায়িকা-গীতিকার
- আফ্রিকান-মার্কিন এলজিবিটিকিউ ব্যক্তি
- ধ্রুপদী ব্লুজ গায়িকা
- পেন্সিলভেনিয়ার এলজিবিটিকিউ ব্যক্তি
- পেন্সিলভেনিয়ার সঙ্গীতশিল্পী-গীতিকার
- ফিলাডেলফিয়ার জ্যাজ সঙ্গীতজ্ঞ
- বাল্টিমোরের সঙ্গীতশিল্পী
- মার্কিন এলজিবিটিকিউ গীতিকার
- মার্কিন এলজিবিটিকিউ সঙ্গীতশিল্পী
- মার্কিন গায়িকা-গীতিকার
- মার্কিন জ্যাজ গায়িকা
- মার্কিন জ্যাজ সঙ্গীতশিল্পী
- মাদক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত মার্কিন ব্যক্তি
- মেরিল্যান্ডের জ্যাজ সঙ্গীতজ্ঞ
- মেরিল্যান্ডের সঙ্গীতশিল্পী-গীতিকার
- আলাডিন রেকর্ডসের শিল্পী
- কলাম্বিয়া রেকর্ডসের শিল্পী
- ডেকা রেকর্ডসের শিল্পী
- ভোকালিয়ন রেকর্ডসের শিল্পী
- নিউ ইয়র্কে অ্যালকোহল সম্পর্কিত মৃত্যু
- সেন্ট রেমন্ড্স সেমেটারিতে (ব্রংক্স) সমাহিত
- গ্র্যামি আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রাপক