নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বাঙালিদের তালিকা

১৯০১ সালে নোবেল পুরস্কার প্রচলনের পর থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ৪ জন বাঙালি ব্যক্তিত্ত্ব এই পুরস্কার জয় করেছেন। সর্বপ্রথম বাঙালি হিসাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ১৯১৩ সালে, সাহিত্যে। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে অমর্ত্য সেন অর্থনীতিতে এবং ২০০৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস শান্তিতে এই পুরস্কার জয় করেন। ২০১৯ সালে পুনরায় অর্থনীতিতে নোবেল পান অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। আরো ১৩ জন ব্যক্তি মনোনয়ন পেয়েছেন।

ছবি	নাম	জন্ম ও মৃত্যু	দেশ	ক্ষেত্র	বর্ষ	যৌক্তিকতা
	রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর	জন্ম: ৭ মে ১৮৬১ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত মৃত্যু: ৭ আগস্ট ১৯৪১ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	ব্রিটিশ ভারত	সাহিত্য	১৯১৩	তার কাব্যের অতি উচ্চমানের সংবেদনশীল, পরিশুদ্ধ ও সৌন্দর্য্যমণ্ডিত পংক্তির জন্য, যার মাধ্যমে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তার কাব্যিক চিন্তা-চেতনা নিজস্ব ইংরেজি শব্দে প্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছেন, যা পশ্চিমা সাহিত্যেরই একটি অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
	অমর্ত্য সেন	জন্ম: ৩ নভেম্বর ১৯৩৩ শান্তিনিকেতন, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	ভারত	অর্থনীতি	১৯৯৮	কল্যাণ অর্থনীতিতে মৌলিক অবদানের জন্য। মানব উন্নয়ন তত্ত্ব, ক্যাপাবিলিটি অ্যাপ্রোচ (সক্ষমতা পদ্ধতি)
	মুহাম্মদ ইউনুস	জন্ম: ২৮ জুন ১৯৪০ হাটহাজারী, চট্টগ্রাম, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)	বাংলাদেশ	শান্তি	২০০৬	ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রতিষ্ঠায় অবদানের মাধ্যমে নিচ হতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সৃষ্টির জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের সাথে যৌথভাবে পুরস্কৃত হন।
	অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়	জন্ম: ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬১ কৃষ্ণনগর, নদিয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত	যুক্তরাষ্ট্র	অর্থনীতি	২০১৯	বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূর করার জন্য পরীক্ষামূলক পথ সন্ধানের স্বীকৃতি হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান। উন্নয়ন অর্থনীতিতে দৈবকৃত নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষণের ব্যবহার।

মনোনয়ন প্রাপ্তদের তালিকা

নিচের তালিকাটি হলো নোবেল পুরস্কারের মনোনয়ন প্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকা যারা কখনো সেটি জেতেননি।

ছবি	মনোনীত বাক্তি	জন্ম	মৃত্যু	বর্ষ	ক্ষেত্র	দেশ	টীকা
	রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর	৭ মে ১৮৬১ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	৭ আগস্ট ১৯৪১ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	১৯১৩	সাহিত্য	ব্রিটিশ ভারত	তার কাব্যের অতি উচ্চমানের সংবেদনশীল, পরিশুদ্ধ ও সৌন্দর্য্যমণ্ডিত পংক্তির জন্য, যার মাধ্যমে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তার কাব্যিক চিন্তা-চেতনা নিজস্ব ইংরেজি শব্দে প্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছেন, যা পশ্চিমা সাহিত্যেরই একটি অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। মননায়নদাতা: টমাস স্টার্জ মুর (১৮৭০–১৯৪৪) ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
	রবীন্দ্রনাথ দত্ত	১ অক্টোবর ১৮৮৩ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	৬ জুলাই ১৯১৭ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	১৯১৬	সাহিত্য	ব্রিটিশ ভারত	মনোনয়নদাতা: মনো গাঙ্গেদি রায়া যতীন্দ্র চন্দুরী
	উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী	১৯ ডিসেম্বর ১৮৭৩ সারদাঙ্গা, পূর্বস্থলী, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৬ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	১৯২৯, ১৯৪২	চিকিৎসাবিজ্ঞান	ব্রিটিশ ভারত	ইউরিয়া স্টিবামিন (কালা জ্বরের চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিমোনিয়াল যৌগ) এবং একটি নতুন রোগ, কালাজ্বর-পরবর্তী ত্বকীয় লেশম্যানিয়াসিস আবিষ্কারের জন্য মনোনীত হন। মনোনয়নদাতা: সুধাময় ঘোষ (১৮৯০–১৯৭০) ইউ পি বসু এম এন বসু সুবোধ চন্দ্র মহলানবীশ (১৮৬৭–১৯৫৩) সি সি বসু
	মেঘনাদ সাহা	৬ অক্টোবর ১৮৯৩ শেওড়াতলী, ঢাকা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে গাজীপুর, বাংলাদেশ)	১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬ নয়াদিল্লি	১৯৩০, ১৯৩৭, ১৯৩৯, ১৯৪০, ১৯৫১, ১৯৫৫	পদার্থবিজ্ঞান	ব্রিটিশ ভারত ভারত	নক্ষত্রের রাসায়নিক ও ভৌত অবস্থা বর্ণনা করতে ব্যবহৃত সাহা আয়নীভবন সমীকরণ আবিষ্কারের জন্য মনোনীত হন। মনোনয়নদাতা: দেবেন্দ্র মোহন বসু (১৮৮৫–১৯৭৫) শিশির কুমার মিত্র (১৮৯০–১৯৬৩) আর্থার কম্পটন (১৮৯২–১৯৬২)
	হরিমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়	—	৩ সেপ্টেম্বর ১৯৬০ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত	১৯৩৪, ১৯৩৬, ১৯৩৮	শান্তি সাহিত্য	ব্রিটিশ ভারত	তার বই "Secrets of Religion and Way to Peace" ("ধর্মের গোপন রহস্য ও শান্তির পথ") এর জন্য মনোনীত হন। মনোনয়নদাতা: দেবদত্ত রামকৃষ্ণ ভান্ডারকর (১৮৭৫–১৯৫০) এস কে গুপ্ত তিনি "View of Peace" ("শান্তির দৃষ্টিভঙ্গি") নামে একটি পুস্তিকা লিখেছিলেন।
	বিজয়চন্দ্র মজুমদার	২৭ অক্টোবর ১৮৬১ খানাকুল, ফরিদপুর, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)	৩০ ডিসেম্বর ১৯৪২ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	১৯৩৭, ১৯৩৯	সাহিত্য	ব্রিটিশ ভারত	মনোনয়নদাতা: সেন সত্যেন্দ্রনাথ (১৯০৯–?) মুকুন্দদেব চট্টোপাধ্যায়
	সঞ্জীব কুমার চৌধুরী	৫ সেপ্টেম্বর ১৯০২ ব্রিটিশ ভারত	—	১৯৩৮, ১৯৩৯, ১৯৫০, ১৯৫১, ১৯৫৫, ১৯৫৯, ১৯৬৭, ১৯৬৮, ১৯৭০, ১৯৭১	শান্তি সাহিত্য	ব্রিটিশ ভারত ভারত	বিশ্ব শৃঙ্খলা, বিশ্ব শান্তি এবং বিশ্ব ফেডারেলিজম আন্দোলন এবং তার বই "A Constitution for World Government" ("বিশ্বসরকারের জন্য একটি সংবিধান") এবং বিশ্ব ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি লেখার জন্য ও মানবতার সেবার জন্য মনোনীত হন। মনোনয়নদাতা: মাহমুদ হাসান (১৮৯৭–?) কে দানুঙ্গো রমেশচন্দ্র মজুমদার (১৮৮৮–১৯৮০) লর্ড জন বয়েড অর্‌ (১৮৮০–১৯৭১) ললিতা রাজলক্ষ্মী বটেশ্বর সিং প্রীমথ চৌধুরী দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরী তিনি ১৯৫২ সালে হিরোশিমায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান কংগ্রেস ফর ওয়ার্ল্ড ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন এবং ১৯৫১ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত পিপলস ওয়ার্ল্ড কনভেনশনের বিশেষ অধিবেশনে একটি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।
	অরবিন্দ ঘোষ	১৫ আগস্ট ১৮৭২ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	৫ ডিসেম্বর ১৯৫০ পুদুচেরি, ফরাসি ভারত (বর্তমান পুদুচেরি, পুদুচেরি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, ভারত)	১৯৪৩, ১৯৫০	শান্তি সাহিত্য	ব্রিটিশ ভারত ভারত	মনোনয়নদাতা: ফ্রান্সিস ইয়ংহাসব্যান্ড (১৮৬৩–১৯৪২) শৈলেশ্বর সেন
	সত্যেন্দ্রনাথ বসু	১ জানুয়ারি ১৮৯৪ কলকাতা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত	১৯৫৬, ১৯৫৯, ১৯৬২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, ১৯৭০	পদার্থবিজ্ঞান	ভারত	কোয়ান্টাম বলবিদ্যার বসু-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান এবং বোস-আইনস্টাইন ঘনীভবন তত্ত্বের ভিত্তি স্থাপনের জন্য মনোনীত হন। মনোনয়নদাতা: কেদারেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০০–১৯৭৫) দৌলত সিং কোঠারি (১৯০৬–১৯৯৩) শিবপ্রতিম বাগচী (?) অনিন্দ্য দত্ত (?) মাম্বিল্লিকালাথিল গোবিন্দ কুমার মেনন (১৯২৮–২০১৬)
	সুধীন্দ্রনাথ ঘোষ	৩০ জুলাই ১৮৯৯ বর্ধমান, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	৩০ ডিসেম্বর ১৯৬৫ লন্ডন, ইংল্যান্ড	১৯৬৫	সাহিত্য	যুক্তরাজ্য	মনোনয়নদাতা: হেনরি ডি জিগলার (১৮৮৫–১৯৭০)
	দাস মণি রায়	১২ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৫ মেমারী, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	—	১৯৬৭	শান্তি	ভারত	মনোনয়নদাতা: সুবিমল কান্নার মুখোপাধ্যায়
	বিনয়রঞ্জন সেন	১ জানুয়ারি ১৮৯৮ ডিব্রুগড়, আসাম, ভারত	১২ জুন ১৯৯৩ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত	১৯৬৭, ১৯৬৮	শান্তি	ভারত	খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)-তে তার কাজের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তিতে তার অসামান্য অবদানের জন্য মনোনীত হন। মনোনয়নদাতা: রাকেল সেওয়ারিন (১৯০৬–১৯৯৫) মরিস সাউভ (১৯২৩–১৯৯২)
	যোগেশচন্দ্র ভট্টাচার্য্য	প্রায় ১৮৯৫ ব্রিটিশ ভারত	২ এপ্রিল ১৯৬০ ভারত	১৯৬৯	শান্তি	ভারত	আধ্যাত্মিকতার প্রচারে তার নিষ্ঠার জন্য মনোনীত হন, যার মাধ্যমেই তিনি বিশ্বাস করেন, পৃথিবীতে শান্তির উদয় হবে। তার বই "Prayers for a New Advent" শান্তির আদর্শ প্রচারে এক যুগান্তকারী অবদান। মরণোত্তর মনোনয়নদাতা: যুগল কিশোর মণ্ডল
	তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়	২৭ জুলাই ১৮৯৮ লাভপুর, বীরভূম, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত	১৯৭১, ১৯৭২, ১৯৭৩	সাহিত্য	ভারত	মনোনয়নদাতা: কৃষ্ণ কৃপালনী (১৯০৭–১৯৯২) সুইডিশ একাডেমির নোবেল কমিটি
	সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়	২৬ নভেম্বর ১৮৯০ শিবপুর, হাওড়া, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	২৯ মে ১৯৭৭ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত	১৯৭২, ১৯৭৩	সাহিত্য	ভারত	মনোনয়নদাতা: প্রতুলচন্দ্র গুপ্ত (১৯১০–১৯৯০) সুইডিশ একাডেমির নোবেল কমিটি
	শ্রী চিন্ময়	২৭ আগস্ট ১৯৩১ বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)	১১ অক্টোবর ২০০৭ নিউ ইয়র্ক শহর, যুক্তরাষ্ট্র	১৯৭২, ১৯৭৩, ১৯৭৪	শান্তি সাহিত্য	ভারত	মনোনয়নদাতা: বার্নার্ড ও'কেলি (১৯২৬–২০০৫) নরম্যান হোমস পিয়ারসন (১৯০৯–১৯৭৫) জোসেফ অ্যাক্সলেরড (১৯১৫–২০১০) কার্ল ক্রোবার (১৯২৬–২০০৯) পিটার এ পিটজেল (১৯৪১–) ফ্রান্সিস সি. ক্যাডি
	শেখ মুজিবুর রহমান	১৭ মার্চ ১৯২০ টুঙ্গিপাড়া, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)	১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ঢাকা, বাংলাদেশ	১৯৭৫	শান্তি	বাংলাদেশ	মনোনয়নদাতা: আব্দুল মালেক উকিল (১৯২৪–১৯৮৭) হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার কারণে পুরস্কার পাওয়ার একমাত্র সুযোগ হারান।
	মহাশ্বেতা দেবী	১৪ জানুয়ারি ১৯২৬ ঢাকা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)	২৮ জুলাই ২০১৬ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত	২০১২	সাহিত্য	ভারত
	তসলিমা নাসরিন	২৫ আগস্ট ১৯৬২ ময়মনসিংহ, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)	(৬২ বছর বয়স)	২০০৫	শান্তি	বাংলাদেশ
	মুহাম্মদ ইউনূস	২৮ জুন ১৯৪০ হাটহাজারী, চট্টগ্রাম, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত	(৮৪ বছর বয়স)	২০০৬	শান্তি	বাংলাদেশ	ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রতিষ্ঠায় অবদানের মাধ্যমে নিচ হতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সৃষ্টির জন্য। ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের সাথে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।