বিষয়বস্তুতে চলুন

দেশি লাউবুছা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

দেশি লাউবুছা
Chela laubuca
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Actinopterygii
উপশ্রেণী: Neopterygii
অধঃশ্রেণী: Teleostei
মহাবর্গ: Ostariophysi
বর্গ: Cypriniformes
উপবর্গ: Cyprinoidea
পরিবার: Cyprinidae
গণ: Chela
প্রজাতি: C. laubuca
দ্বিপদী নাম
Chela laubuca

দেশি লাউবুছা বা চাপ চেলা বা লাউবুকা বা কাশ খয়রা (বৈজ্ঞানিক নাম: Chela laubuca) (ইংরেজি: Indian glass barb) হচ্ছে Cyprinidae পরিবারের Chela গণের একটি স্বাদুপানির মাছ

বর্ণনা

[সম্পাদনা]

লম্বা দেহ পার্শ্বীয়ভাবে বেশ চাপা এবং দেহ গভীরতাও অনেক বেশী। উদরীয় প্রান্ত খাঁজকাটা। মুখ তীর্যকভাবে উন্মুক্ত। উপরের চোয়াল অক্ষিকোটরের সম্মুখ কিনারা পর্যন্ত বিস্তৃত। পৃষ্ঠপাখনা পায়ুপাখনার বিপরীত পাশে পৃষ্ঠদেশ বরাবর সামান্য পেছনে অবস্থান করে। বক্ষপাখনা শ্রোণীপাখনার ভিত্তির মাঝ বরাবর বা প্রায় শেষপ্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। শ্রোণীপাখনা পায়ুপাখনার তুলনায় বক্ষপাখনার ভিত্তির নিকটে অবস্থিত। বক্ষপাখনা বড় ও ডানার মত বিস্তৃত। পুচ্ছপাখনা দ্বিখণ্ডিত এবং উভয় খণ্ড সমান।

অর্ধস্বচ্ছ দেহের বর্ণ রুপার মতো চকচকে থেকে সবুজাভ-ধূসর। পুচ্ছদণ্ডে বেগুনী দীপ্তি দেখতে পাওয়া যায়। পুচ্ছপাখনার ভিত্তির নিকটে সোনালী প্রান্ত বিশিষ্ট গাঢ় কালো বর্ণের দাগ দেখতে পাওয়া যায়। পাখনাসমূহ হলুদাভাব থেকে উজ্জ্বল কমলা বর্ণের।[]

বিস্তৃতি

[সম্পাদনা]

এই মাছ এশিয়াতে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালয় দ্বীপপুঞ্জে, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল এবং ইন্দো-চীনে দেখা যায়।[]

স্বভাব ও আবাসস্থল

[সম্পাদনা]

এ মাছ সাধারণত খাল, বিল, বাঁওড় ও নদীতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এছাড়াও বর্ষাকালে ধানপাট ক্ষেতে জমে থাকা পানিতে এদের প্রাচুর্যতা লক্ষ্য করা যায়। এরা বালুময় কাদাযুক্ত স্থানে থাকতে পছন্দ করে। এরা ঝাঁক বেঁধে চলে। এরা ঝর্ণা ধারা, পুকুর ও ডোবার মধ্যম গভীর এলাকায় বিচরণ করে। স্থির ও দ্রুত চলমান উভয় প্রকৃতির জলাশয়েই এদের দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত ১৫-৩০টি মাছ ঝাঁক বেঁধে চলে।

খাদ্যাভ্যাস

[সম্পাদনা]

দেশি লাউবুছা পানির উপরি স্তরে বিচরণকারী মাছ। এরা জলজ পোকামাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করে। এছাড়া জলজ উদ্ভিদের পাতা ও উদ্ভিদ কাণ্ডের পাতলা নরম টিস্যুও খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে থাকে। এরা প্রধানত পতঙ্গ খেয়ে থাকে তবে জলজ উদ্ভিদও খেতে দেখা যায়।

বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ

[সম্পাদনা]

আইইউসিএন বাংলাদেশ (২০০০) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এই প্রজাতিটি বাংলাদেশে বিপন্ন হিসেবে বিবেচিত।[]

অর্থনৈতিক গুরুত্ব

[সম্পাদনা]

একক প্রজাতি হিসেবে এর উৎপাদন তথ্য পাওয়া যায় না। অন্যান্য মাছের সাথে ধরা পড়ে। এদেরকে টর, টাকি মাছ বা অন্যান্য শিকারি মাছ ধরার টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ্যাকুয়ারিয়ামের বাহারি মাছ হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর কদর রয়েছে।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. এ কে আতাউর রহমান, গাউছিয়া ওয়াহিদুন্নেছা চৌধুরী (অক্টোবর ২০০৯)। "স্বাদুপানির মাছ"। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; আবু তৈয়ব, আবু আহমদ; হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমাদ, মোনাওয়ার। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ২৩ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৬০–৬১। আইএসবিএন 984-30000-0286-0 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid prefix (সাহায্য)